ফরিদপুরে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়েছিল ইজিবাইক চালক। পরে গভীর রাতে মহাসড়কের পাশেই মিললো তার মরদেহ। নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ওই চালক, মৃত্যুর মূল রহস্য উদঘাটনে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা যায়, রোববার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের শোভারামপুর এলাকার বাসিন্দা আরিফ খানের ছেলে ইজিবাইক চালক তুহিন খান বাড়ি থেকে বের হন। নিজের ইজিবাইক বাড়িতে রেখে অন্যের ইজিবাইকে চড়ে বদরপুর এলাকায় গিয়ে নামেন। এরপর গভীর রাতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বদরপুর এলজিইডি অফিস সংলগ্ন এলাকায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পরে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিতসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত তুহিনের স্ত্রী নিপা বেগম বলেন, “আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। ইজিবাইক চালানোর সময় হয়তো কারো সাথে কখনও বাক-বিতন্ডা হয়েছে, সেই কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালের লোকজন কইছে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে বুঝতে পারতাম, আমার স্বামীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী খুব ভালো মানুষ ছিলেন। তাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচারের দাবি জানাই। আমার সব শেষ হয়ে গেল, তিনটি মেয়ে আমার। আমাদের দেখার কেউ রইলো না।
তুহিনকে হাসপাতালে আনা ইজিবাইক চালক সামচু শেখ বলেন, রাত তিনটার দিকে শহরের দিকে ইজিবাইক নিয়ে আসছিলাম। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বদরপুর এলজিইডি অফিস সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছা মাত্রই দুই ব্যক্তি আমার ইজিবাইক থামিয়ে বলে ভাই একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছে, তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। তাড়াতাড়ি তারা আমার ইজিবাইকে তাকে ওঠালে আমি তখন দেখতে পেয়েই তুহিনকে চিনতে পারি। তখন চিৎকার করে উঠি।
তিনি আও বলেন, তুহিনের জ্ঞান ছিল না। দ্রুত তুহিনকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তুহিনের বাড়িতে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। তবে যে দুইজন লোক আমার ইজিবাইকে তুহিনকে উঠিয়ে দেয় তাদের একজন পথিমধ্যে নেমে পড়ে। অপরজন আমার সাথে হাসপাতাল পর্যন্ত আসে। এরপর সে চলে যায়। আমি তাদের চিনতে পারি নাই।
এদিকে, সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহের সুরতহাল শেষে পুলিশ জানায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ইজিবাইক চালক। তবে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন বলেন, রাত ৩টার দিকে এলজিইডি অফিস সংলগ্ন এলাকায় তুহিনকে পড়ে থাকতে দেখে দুইজন ব্যক্তি একটি ইজিবাইকে করে তুহিনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যুর মূল রহস্য উদঘাটনে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি