বিডি প্রাইম ডেইলি
বাংলাদেশ

‘সাঁঝের মায়া’র কবির ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ


নারীমুক্তি আন্দোলনের পুরাধা ব্যক্তিত্ব গণতান্ত্রিক ও  প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রদূত ‘সাঁঝের মায়া’র কবি বেগম সুফিয়া কামালের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

‘সাঁঝের মায়া’ ছাড়াও ‘মন ও জীবন, ‘শান্তি ও প্রার্থণা’, ‘উদাত্ত পৃথিবী’ ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া ‘সোভিয়েতের দিনগুলি’ এবং ‘একাত্তরের ডায়েরী’ তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ।

মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির সমস্ত প্রগতিশীল আন্দোলনে বেগম সুফিয়া কামালের ভূমিকা ছিলো অনন্য। তার জন্ম ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের রাহাত মঞ্জিলে। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশ নেন এবং নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন এবং তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গণঅভ্যূত্থানে অংশ নেন। ১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। 

সুফিয়া কামাল বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সোভিয়েত লেনিন পদক, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পদকসহ দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশী পুরস্কার লাভ করেছেন।

সুফিয়া কামালের পাঁচ সন্তান। তারা হলেন,আমেনা আক্তার, সুলতানা কামাল, সাঈদা কামাল, শাহেদ কামাল ও সাজেদ কামাল।

তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। 

রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ এবং সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এক অকুতোভয় যোদ্ধা। তিনি নারীসমাজকে অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। 

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি বেগম সুফিয়া কামালের সাহিত্যে সৃজনশীলতা ছিল অবিস্মরণীয়। শিশুতোষ রচনা ছাড়াও দেশ, প্রকৃতি, গণতন্ত্র, সমাজ সংস্কার এবং নারীমুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর লেখনী আজও পাঠককে আলোড়িত ও অনুপ্রাণিত করে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবি বেগম সুফিয়া কামাল যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পঁচাত্তরের পনেরই আগস্টে নির্মমভাবে হত্যা করে যখন এদেশের ইতিহাস বিকৃতির পালা শুরু হয়, তখনও তাঁর সোচ্চার ভূমিকা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণতান্ত্রিক শক্তিকে নতুন প্রেরণা যুগিয়েছিল।

কবির ভাষায়-

“তোমাদের ঘরে আলোর অভাব কভু নাহি হবে আর
আকাশ-আলোক বাঁধি আনি দূর করিবে অন্ধকার।
শস্য-শ্যামল এই মাটি মা’র অঙ্গ পুষ্ট করে
আনিবে অটুট স্বাস্থ্য, সবল দেহ-মন ঘরে ঘরে।”

প্রধানমন্ত্রী তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।





Source link

Related posts

সরকার এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী

ইমতিয়াজ আলি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া অবিলম্বে পাসের দাবি

ইমতিয়াজ আলি

সাংবাদিককে অপহরণের অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

ইমতিয়াজ আলি