রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২২ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ আদেশ দেন।
মামলাটি গ্রহণ করার মতো কোনো উপাদান না থাকায় আদালত দুপুরে তা খারিজ করে দেন।
রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ আবেদন করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন।
মামলার আবেদনে ডিবির প্রধান হারুন অর রশিদসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যকে আসামি করার আর্জি জানানো হয়।
মামলার আবেদনে ডিবির প্রধান ছাড়াও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান, ডিবির দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার সঞ্জিত কুমার রায়, রমনার যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার দাস, যুগ্ম কমিশনার মেহেদী হাসান, অতিরিক্ত কমিশনার (লজিস্টিক, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন্স) বিপ্লব কুমার সরকার, মতিঝিল জোনের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান, মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার গোলাম রুহানি এবং ঘটনার দিন আর্জেন্টিনার জার্সি পরিহিত গুলি করা আনসার সদস্য আল আমিনের নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
বাদীপক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার মামলার শুনানি করেন। এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বারের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও কৃষক দলের সহ-আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচ এম মাসুম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আবেদনে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ৪৫০/৪৪৭/৩৯৫/৩৯৭/৪২৭/৩৪ ধারায় অভিযোগ এনে বলা হয়, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস, অকটেন, ডিজেল, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন মূল্য বাড়ার প্রতিবাদ এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে দলীয় নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে দলটি বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ঘোষণা করে। এর ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিবাদ গণসমাবেশ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের তারিখ নির্ধারিত ছিল।
সারাদেশ থেকে নেতাকর্মী ও গণতন্ত্রকামী জনতা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসা যাওয়া করতে থাকে। বিষয়টি অতি উৎসাহী আসামিদের নজরে আসে এবং অনুষ্ঠানটি বানচালের ষড়যন্ত্রের ছক কষতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদসহ ১০ থেকে ১২ জন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলার তালা ভেঙে ফেলে। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ম্যুরালটি ভাঙা হয়। এরপর আসামিরা দোতলায় গিয়ে তালা ভেঙে একটি কম্পিউটার ও একটি প্রিন্টার নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা। এভাবে তারা কার্যালয় থেকে ৪৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায় এবং তিন লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকার মালামাল ক্ষতি করে।
হারুন অর রশিদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার দাসসহ তাদের পুলিশ সদস্যদের নির্দেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে অনিষ্ঠ সাধনের পাশাপাশি মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে দস্যুতার মাধ্যমে লুটপাট করে তাণ্ডব চালায় এবং নিচ তলা থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত ডাকাতি করেছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
আবেদনে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু অথবা অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট থানাকে এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করতে আদেশ দেওয়ার ও সুবিচারের আর্জি জানানো হয়েছিল।